স্পটিং ১০১
আপনার পিরিয়ড শুরু হওয়ার আগেই কি কখনো হালকা রক্তপাত হচ্ছে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন কি? ঠিক এমন ভাবেই আপনার পিরিয়ড শেষ হওয়ার পরও কি এমনটি কখনো হয়েছে?
পিরিয়ডের আগে এবং কখনও কখনও পরে এমন হালকা রক্তপাত বা স্পট দেখতে পাওয়া মহিলাদের মধ্যে বেশ সাধারণ। প্রায় সবাই অন্তত একবার এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। এটি সাধারন পিরিয়ড হতে কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে।
স্পটিং কি?
পিরিয়ড ছাড়াও যোনিপথ হতে যেকোন ধরনের রক্তপাত হলে তাকে স্পটিং বলে। বেশিরভাগ সময়েই স্পটিং কোন প্রকার ক্ষতির কারন হয় না। কিন্তু রক্ত প্রবাহের পরিমাণ এবং কতটা ঘনঘন হচ্ছে তার উপর ভিত্তি করে এটি কোন রোগের লক্ষণ হতে পারে।
স্পটিং এর ফলে আপনি ক্র্যাম্প, পেটে ব্যথা, মেজাজের পরিবর্তন, ক্লান্তি, শরীরের তাপমাত্রার পরিবর্তন, অলসতা, ভারী ফ্লো এর মত আরও অনেক কিছুর সম্মুখীন হতে পারেন। স্পটিং এর কারণে ইস্ট ইনফেকশন, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অনিয়মিত পিরিয়ডও হতে পারে।
স্পটিং কখন ঘটে?
ডিম্বস্ফোটনের সময় সাধারণত স্পটিং হয়ে থাকে। ফলিকলের মাধ্যমে ডিম ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে মাঝেমাঝে সামান্য রক্তপাত হয়ে থাকে। স্পটিং এর ফলে কিছুটা ক্রাম্পও হয়ে থাকে এবং এটি সাধারনত মাসিক সাইকেলের মাঝামাঝি সময়ে হয়ে থাকে।
ডিম্বস্ফোটনের এক সপ্তাহ পরেও মাঝেমাঝে স্পটিং হয়ে থাকে। ডিম্বাণু শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হওয়ার ফলেও হালকা রক্তপাত হতে পারে, যা ইমপ্লান্টেশন ব্লিডিং নামে পরিচিত। এর সময়কাল ১-২ দিন, এবং এটি মাসিক চক্রের মাঝামাঝিতেও ঘটতে পারে।
কারণসমূহ
জরায়ু ফাইব্রয়েডও স্পটিং এর কারন হতে পারে। জরায়ুতে পলিপ এবং ফাইব্রয়েডের বৃদ্ধির ফলে অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে। যারফলে, এন্ডোমেট্রিয়াম ফাইব্রয়েড বিকাশ করতে পারে। যদিও এই বৃদ্ধিগুলি ক্ষতিকারক নয়, তবে এগুলি খুব বেদনাদায়ক হতে পারে এবং ক্র্যাম্প সৃষ্টি করে। এগুলো দীর্ঘদিন ধরে স্পটিং, পেল্ভিক ব্যাথা, অনিয়মিত মাসিক এবং উর্ভরতার সমস্যারও কারন হয়ে থাকে।
আপনি যদি নতুন গর্ভনিরোধক পদ্ধতির ব্যবহার শুরু করে থাকেন, বিশেষ করে হরমোনজনিত পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন, তবে তা অনিয়মিত হালকা রক্তপাতের কারন হতে পারে। আপনার শরীরেকে এধরনের পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় প্রয়োজন হয়ে থাকে, তাই আপনি কয়েক মাস ধরে স্পটিং এর মুখোমুখি হতে পারেন। যাইহোক, যদি পরিবর্তনের কিছুদিনের মধ্যেই স্পটিং এর সম্মুখিন আপনাকে হতে হয়নি, তবে কয়েক মাস পরে স্পটিং শুরু হয়েছে এমনটি হয়, সেক্ষেত্রে একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।
অন্যান্য কিছু কারণের মধ্যে রয়েছে যোনিপথে সামান্য আঘাত, প্রসবের পর স্তন্যপান করানো, পেল্ভিক প্রদাহ এবং STI। যদিও এ কারনগুলো খুবই কম দেখা যায়। স্পটিং কিছুক্ষেত্রে ক্যান্সারের (জরায়ু, সার্ভিকাল, যোনি, ডিম্বাশয়) লক্ষন করতে পারে। যদি রক্তপাত ক্রমাগত খারাপ হতে থাকে এবং অতিরিক্ত ব্যথা হয় তবে একজন ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। মেনোপজ আছে এমন মহিলাদের জন্য, এটি একটি বড় ক্যান্সার সূচক।
আপনি যদি গর্ভবতী হন এবং স্পটিং এর মুখোমুখি হন, অবিলম্বে হাসপাতালে যান। গর্ভাবস্থায় হালকা রক্তপাত গর্ভপাত বা একটোপিক গর্ভাবস্থার লক্ষণ।
যদিও পিরিয়ডের আগে হালকা রক্তপাত স্বাভাবিক, তা যদি ক্রমাগত বাড়তে থাকে, এবং ব্যথা ও বমি বমি ভাব শুরু করে, তবে এটি চিন্তার বিষয়। লক্ষণগুলি না কমে থাকে, একজন গাইনোকোলজিস্টের সাথে যোগাযোগ করুন।
Download Chondo App
Track your period and get notified.
Download
Beta