|

ঘুম এবং মানসিক স্বাস্থ্য


বাংলা

সুজাতা ডিপ্রেশনে ভুগছেন। সে কোন কাজ করারই শক্তি পাচ্ছে না। এমনকি বসে থাকাতেও তার ক্লান্তিবোধ করে। যেহেতু সে এতটাই বিচ্ছিন্ন বোধ করছিলো, তাই সে দীর্ঘসময় ঘুমানো শুরু করে। এবং দিনে প্রায় ১৪ ঘন্টা ঘুমিয়ে থাকে। 

আবার, ঐশী অনিদ্রায় ভুগছেন। মানসিক চাপে থাকায় তার ঘুমের প্যাটার্ন খুবই অনিয়মিত ছিল। এর ফলে ঘুম প্রায় তার অনিদ্রা হয়ে থাকে। তার এই ঘুমের অভাব তাকে বিরক্ত করে তুলেছে এবং তার মাঝে ডিপ্রেশন তৈরি হয়। 

গল্প দুইটি থেকে আমরা যা দেখতে পাই?

প্রথম গল্পে দেখতে পাই, খারাপ মানসিক অবস্থা, খারাপ ঘুমের প্যাটার্নের দিকে পরিচালিত করে। এবং দ্বিতীয়টিতে, খারাপ ঘুমের অভ্যাস, ডিপ্রেশন বা খারাপ মানসিক স্বাস্থ্যের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। 

ঘুম এবং মানসিক স্বাস্থ্য একে অপরের সাথে সংযুক্ত। এটি অনেকটা দ্বিমুখী রাস্তার মতো।

যখন দুটির মধ্যে সংযোগ বোঝার কথা আসে, তখন আপনাকে জানতে হবে যে কেন ঘুম আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। REM (র‍্যাপিড আই মুভমেন্ট) ঘুম এবং সাধারণভাবে ঘুম, মানসিক ক্রিয়াকলাপ প্রক্রিয়া করতে সাহায্য করে, যেমন স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগ বৃদ্ধি, ইমোশনাল অবস্থা বোঝা এবং আরও অনেক কিছু। সংক্ষেপে, ঘুম জৈবিক ক্রিয়াগুলিকে স্থিতিশীল রেখে আরও ইতিবাচক মানসিকতা তৈরি করতে সহায়তা করে। 

আপনার যদি খারাপ ঘুমের অভ্যাস থাকে তবে এটি মেজাজের পরিবর্তন এবং আপনার প্রোডাক্টিভিটি হ্রাস করতে পারে।যাদের এই ধরনের রুটিন আছে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য জনিত সমস্যা হতে পারে কারণ আমাদের মস্তিষ্ককেরো বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। যখন মস্তিষ্ক তা পায় না, তখন মস্তিষ্ক অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। 

একইভাবে, যদি আপনার ইতিমধ্যেই কোন মানসিক ব্যাধি থাকে, যেমন ডিপ্রেশন বা অ্যাংজাইটি, তাহলেও আপনার ঘুমের প্যাটার্নে পরিবর্তন হতে পারে। ডিপ্রেশনে ভুগছেন এমন লোকেরা প্রায়শই অসময়ে ঘুমোতে শুরু করে, যা "ডিপ্রেশন ন্যাপ" নামেও পরিচিত। মাঝেমাঝে তারা ঘুমের কোন তাড়নাই অনুভব করেন না এবং এতে করে তারা ইনসোমেনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন।

কিভাবে ঘুমের প্যাটার্ন ঠিক করবেন?

যখন ঘুমের প্যাটার্ন ঠিক করার কথা আসে, তখন শুধুমাত্র ঘুমিয়ে পড়ার জন্য যেমন কয়েক মিনিটের জন্য চোখ বন্ধ রাখলেই খুম আসে না, একইভাবে যখন আপনি খুব বেশি ঘুম পাচ্ছে তখনও নিজেকে জাগিয়ে রাখতে মুখে পানির ছিটা দিলে কাজ হয় না। 

আমরা সকলেই জানি যে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য কমপক্ষে ৮ ঘন্টা ঘুম প্রয়োজন। কিন্তু যদি আপনাকে যদি এর অর্ধেক সময় ঘুমাতে বা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ঘুমাতে অসুবিধা হয়, তবে আপনাকে জীবনধারার কিছু পরিবর্তন করতে হবে। 

প্রথমত, একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা আপনাকে এবিষয়ে সাহায্য করবে। তারা আপনার সমস্যা নির্ণয় করতে এবং প্রয়োজনীয় ওষুধের পরামর্শ প্রদান করতে পাড়বেন। তাছাড়া, আপনি জীবনধারায় ছোটখাটো পরিবর্তন করতে পারেন, যেমন সকালে ব্যায়াম করা, অ্যালকোহল এবং ক্যাফেইন বাদ দেওয়া এবং ঘুমের অন্তত এক ঘণ্টা আগে ইলেকট্রনিক্স থেকে দূরে থাকা। 

মনে রাখবেন যে আপনার ঘুমের অভ্যাস পরিবর্তন করতে এবং একটি নতুন রুটিনে অভ্যস্থ হতে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হবে। কিছু দিন যদি রুটিনটি মিস হয়েও যায়, তবে তার মানে এই না যে আপনার সম্পুর্ন চেষ্টাই বৃথা ছিল। আপনি পুনরায় আগের জায়গা থাকেই পুনরায় রুটিন মেনে চলা শুরু করতে পারেন।

Download Chondo App

Track your period and get notified.

Download

Beta

Similar Posts

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।